Advertisement

Main Ad

নদীগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে

নদীমাতৃক আমাদের এই বাংলাদেশ। শাখা-প্রশাখাসহ প্রায় ৮০০ নদ-নদী বিপুল জলরাশি নিয়ে ২৪,১৪০ কিলোমিটার জায়গা দখল করে দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোডের্র (পাউবো) তথ্য মতে, বাংলাদেশে বতর্মানে নদীর সংখ্যা মাত্র ৪০৫টি। সংস্থাটির মতে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী ১০২টি, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী ১১৫টি, উত্তর-পূবার্ঞ্চলের নদী ৮৭টি, উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী ৬১টি, পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী ১৬টি এবং দক্ষিণ-পূবার্ঞ্চলের নদী ২৪টি হিসেবে বিভাজন করে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। এর মধ্যে ৫৪টি নদীই এসেছে ভারত হয়ে আর ৩টি এসেছে মিয়ানমার থেকে। কিন্তু আমাদের এই নদীগুলোর সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। স্বাধীনতার আগে ২৪ হাজার ১৪০ কিলোমিটার নদীপথ ছিল। কমতে কমতে এখন ১০ হাজার এসে পৌঁছেছে। নব্য সম্পন্ন নদী রয়েছে মাত্র ২৩০টি। বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৫-৬ হাজার কিলোমিটার নদীপথ থাকে আর শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ৪-৫ হাজার কিলোমিটার নদী পথ থাকে। দিন দিন আরও কমছে। এ থেকেই বোঝা যায় বাকি নদী মরে গেছে। সব মিলে নদীর অবস্থা ভালো নেই। এই নদীগুলো মরে যাওয়ার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে।

পানি দূষণ: এশীয় অঞ্চলের ৪৮টি দেশের মধ্যে নদীর পানি সবচেয়ে বেশি দূষিত হচ্ছে বাংলাদেশে। নিরাপত্তার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থানকে ঝুঁকিপূণর্ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মাটির ওপরের ও নিচের দু’ধরনের পানির অবস্থাই খারাপ। আজ তাই বেশির ভাগ নদী মৃত।

নদী ভরাট : ভরাট জমিতে নদীর পাড়জুড়ে গড়ে উঠেছে অবৈধ দালানকোঠা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান। নদীর পাড় দখল করে দেদার চলছে বালু, কাঠ বিক্রির রমরমা ব্যবসা।

বর্জ্য পদার্থ :বিভিন্ন নদীর তীরে রয়েছে হাজার রকমের জাহাজভাঙা ও লঞ্চ-স্টিমার মেরামত শিল্প। জলযানের ভাঙা অংশ, তেল, মবিল, তেলজাতীয় সামগ্রী সরাসরি ফেলা হচ্ছে নদীতে। এসব বর্জ্যে রয়েছে ক্রোমিয়াম, সিসা, সালফিউরিক এসিড। এভাবে বেশির ভাগ নদীই হয়ে পড়েছে বিপন্ন, অস্তিত্বহীন। এ নদীগুলো রক্ষা না করলে আমরা নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হবো। তাই নদীগুলো বাঁচিয়ে রাখার জন্য সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও সাধারণ জনগণের সচেতনতা কামনা করছি।

লিখেছেনঃ


নুসরাত জাহান বিথী
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ফিশারীজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগ

Post a Comment

0 Comments