
কষ্ট,হতাশা,ব্যর্থতা,লাঞ্চনা এগুলো যদি জীবণের কাল হয়ে দাড়ায় তবে এগুলো থেকেও পরিত্রান পাওয়া যায়।কিন্তুু নিয়ন্ত্রনহীন জীবণ থেকে সহজে পরিত্রান পাওয়া যায় না। মূলত নিয়ন্ত্রনহীন জীবণ থেকেই কষ্ট,হতাশা,ব্যর্থতা এবং লাঞ্চনার আবির্ভাব হয়।পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই নিয়ন্ত্রনহীনতা রোগে ভুগে। মানুষ ইচ্ছা করলেই সারা পৃথিবীটাকেই নিয়ন্ত্রন করতে পারে, কিন্তুু যত সমস্যা বাঁধে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করার ক্ষেত্রে। মধ্যরাতে রাস্তা ফাঁকা, জনমানবশূন্য, কিন্তু গাড়ি থামানোর রেড লাইট জ্বলছে, মনে করছেন কেউ নেই, গাড়ি চালিয়েই যাই, সমস্যা কি? আপনি নিজেই পরিচয় দিচ্ছেন, আপনি নিয়ন্ত্রনহীন জনগনের অন্তর্ভুক্ত। কষ্ট,হতাশা,ব্যর্থতা আর লাঞ্চনার চরম সীমা যেখানে, সেখানেই নিয়ন্ত্রনহীনতার দুর্ভোগ শুরু। যখনই মানুষ কোনো ভালো কাজের প্রতিজ্ঞা করে এবং প্রতিমুহূর্তেই ভুলে যায়, তখনই বুঝা যায় যে সে ব্যাক্তিটা নিজের উপর পরাধীন। নিজের উপর পরাধীনতার আস্তর যতটা কষ্টদায়ক তা আর কোনোকিছুতে নেই । নিয়ন্ত্রনহীন জীবণ ছাতকের জীবন থেকেও শতগুনে কষ্টকর। মানুষ তার নিজের উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলার কারনেই নানা অশ্লিলত্বে জড়িয়ে পড়ে,জড়িয়ে পড়ে হাজারো-লক্ষ পাপাচরণে। নিজের উপর নিয়ন্ত্রন হারানোর কারনেই মানুষ নিজেই যে নিজের কত ক্ষতি করছে তা জানে না।অনিয়ন্ত্রিত জীবণ আসলেই ব্যাথাবহ এবং বিষাক্তময়। যার ক্ষয় হয়, তবে তিলে তিলে। মানুষ বুঝতেই পারে না যে সে তার উপর কি পাষন্ড্য মনোভাব পুষে রাখছে। নিজের মনকে নিয়ন্ত্রনাধীন করা পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিনতম এবং দুঃসাধ্য কাজ।মানুষ ইচ্ছা করলেই তার মনকে তার দাস বানাতে পারে না। বরং মানুষ সারাজীবন এই মনের দাস হয়ে বেঁচে থাকে। তবে যেসকল শ্রদ্ধাভাজন ব্যাক্তি,যারা মনকে তাদের নিয়ন্ত্রনাধীন রাখতে পারে, তারা আসলে মানুষ নয়। তারাই প্রকৃত আরশাফুল মাখলুকাত। আমরা যারা মানুষের সাইনবোর্ড লাগিয়ে সবাই ঘুরে বেড়াই, কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছি, আমরা কি আসলেই মানুষ, নাকি মাটির তৈরী প্রতিকৃতি? ক্ষুধার্ত সিংহ যার নিয়ন্ত্রন নেই নিজের প্রতি, সামনে যা শিকার পায় তাকেই সাঙ্গ করে দেয়। তদ্রুপ মানুষ যদি, তার ক্ষুধা মেটাতে যা ইচ্ছা তাই করে, কোনো বিবেচনা না করে, তবে তাদেরকে কি মানুষ বলা যায়? আর মানুষের ক্ষুধা তো সৃষ্টির মধ্যে বৈচিত্র্যময়,। মানুষই একমাত্র প্রাণী যার ক্ষুধা শুধু পেটেই নয় বরং তার মনেও ক্ষুধা আছে।কিন্তুু মনের ক্ষুধা কি কখনো প্রশমিত হয়? তাই এ দিক থেকে মানুষ সৃষ্টির সবথেকে একবারেই ইউনিক।তাই যেসকল ব্যাক্তি, যার নিজের উপর নিয়ন্ত্রন নেই, তাদের দ্বিপদ বিশিষ্ট বিশেষ জন্তু ব্যাতিরেখে কি আর বলা যায়? মানুষ নিজের ভারসাম্য নিজেই বজায় রাখতে পারে না, আবার স্লোগান দেয় পরিবেশ, জাতি,রাষ্ট্র,সমাজ ইত্যাদির ভারসাম্য রক্ষা করার। কি অদ্ভুদ মানুষের আচরণবিধি !
0 Comments